২১ নভেম্বর ২০২৫, ০৬:৫৫ অপরাহ্ন, ২৯শে জমাদিউল আউয়াল, ১৪৪৭ হিজরি, শুক্রবার, ৬ই অগ্রহায়ণ, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ

নোটিশ
জরুরী ভিত্তিতে কিছুসংখ্যক জেলা-উপজেলা প্রতিনিধি নিয়োগ দেওয়া হবে যোগাযোগ- ০১৭১২৫৭৩৯৭৮
সর্বশেষ সংবাদ :
ছারছীনার পীর সাহেব হুজুরের বরিশাল আগমন উপলক্ষে আগামীকাল শনিবার ঈছালে ছওয়াব ওয়াজ মাহফিলের আয়োজন করা হয়েছে চুয়াডাঙ্গায় উদ্ধার হওয়া তিনটি তক্ষক বনায়ন ও নার্সারি এবং প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের বাগানে অবমুক্ত ফাতেমা জোহরা আদিবার আন্তর্জাতিক সাফল্য; অস্ট্রেলিয়ার নিবন্ধিত আর্কিটেক্ট স্ত্রীকে নির্যাতনের মামলায় বরগুনার শিক্ষা কর্মকর্তার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা রবিউল হত্যা মামলায় নিরপরাধদের জড়ানোর অভিযোগে বাবুগঞ্জে বিএনপি’র একাংশের সংবাদ সম্মেলন বাবুগঞ্জের ছাত্রদল নেতার খুনিদের গ্রেপ্তার পরবর্তী দৃষ্টান্ত ফাঁসির দাবিতে বিক্ষোভ চুয়াডাঙ্গায় ৩ তক্ষকসহ গ্রেফতার ১জন বাবুগঞ্জ এলজিইডি’র এলসিএস কমিউনিটি অর্গানাইজার সানজিদার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার ও হয়রানির অভিযোগ জোটের চাপ নাকি অভ্যন্তরীণ কোন্দল? বরিশাল -৩ আসনে এখনো প্রার্থী চূড়ান্ত করতে পারেনি বিএনপি। ভোটারদের মাঝে ‘ভিআইপি চমক’-এর গুঞ্জন বাবুগঞ্জে উপজেলা প্রশাসনের উদ্যোগে ক্রীড়া সামগ্রী বিতরণ
সিলেট জুড়ে নি¤œ ও মাধ্যবিত্ত আয়ের মানুষেরা সংসার চলাতে জীবন যুদ্ধে দিশেহারা

সিলেট জুড়ে নি¤œ ও মাধ্যবিত্ত আয়ের মানুষেরা সংসার চলাতে জীবন যুদ্ধে দিশেহারা

আবুল কাশেম রুমন,সিলেট: প্রতিদিন বাড়ছে নিত্যপূন্যের দাম। গোঠা সিলেট বিভাগের দ্বিতীয় লন্ডন হিসেবে পরিচিত লাভ করলে সেই প্রবাসী অধ্যাসিত এলাকায় নি¤œ ও মাধ্যবিত্ত আয়ের মানুষেরা সংসার চলাতে জীবন যুদ্ধে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন। সময়ের পরিবর্তনে দিন যত যাচ্ছে বাড়ছে নিত্যপণ্যের দাম। শুধু চাল, ডাল, তেল, চিনি, আটা, ময়দা নয়- প্রায় সব ধরনের পণ্যের দাম ঊর্ধ্বমুখী। মাছ-মাংসে তো হাত দেওয়ার ছোয়া নেই। মানুষের জীবনযাত্রায় খরচ বেড়েই চলেছে। কিন্তু আয় বাড়ছে না। এতে অধিকাংশ ভোক্তার সংসার চালানোই কঠিন হয়ে পড়েছে।
চলমান পরিস্থিতিতে স্বল্প আয়ের মানুষের নিত্য দিনের চাহিদায় কাটছাঁট করতে হচ্ছে। সব মিলে নিত্যপণ্যের বাড়তি দাম মেটাতে ভোক্তার হাঁসফাঁস অবস্থা। অনেক ক্রেতা অপরিহার্য পণ্য ছাড়া অন্য কিছু কেনা বাদ দিয়েছেন। অনেক মধ্যবিত্ত ও নিম্নবিত্ত পরিবার খাবারের বাজেট কমিয়ে দিয়েছেন। যে কারণে শরীরে পুষ্টি ঘাটতি ও দেখা দিচ্ছে।
নগরীর বিভিন্ন খুচরা বাজার ঘুওে ক্রেতা ও বিক্রেতার সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এ দিন প্রতি ডজন ডিম বিক্রি হয়েছে ১৭০ টাকা। আর পাড়া-মহল্লার মুদি দোকানে বিক্রি হয়েছে সর্বোচ্চ ১৮০ টাকা। যা ৭ দিন আগে বিক্রি হয়েছে ১৫০ টাকা। আর এক মাস আগে ১৪০ টাকা ছিল।
প্রতিকেজি আমদানী করা পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৬০-৬৫ টাকা। যা এক সপ্তাহ আগে ছিল ৪৫-৫০ টাকা। দেশি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে সর্বোচ্চ ৭০-৭৫ টাকা। যা ৭ দিন আগে ৫৫-৬০ টাকা ছিল। দেশি রসুন প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ২২০, যা এক মাস আগে ১৮০ টাকায় বিক্রি হয়েছে, আমদানী করা রসুন বিক্রি হচ্ছে ২৪০ টাকা, যা এক সপ্তাহে আগে ছিল ২০০ টাকা। দেশি আদা বিক্রি হচ্ছে ৩০০ টাকা। যা আগে ২৫০ টাকা ছিল। ব্রয়লার মুরগি প্রতিকেজি বিক্রি হচ্ছে ২০০ টাকা, এক মাস আগে ১৬৫-১৭০ টাকায় বিক্রি হয়েছে। প্রতিলিটার খোলা পাম অয়েল বিক্রি হচ্ছে ১৩৫ টাকা। যা এক মাস আগে ১৩০ টাকা ছিল।
প্রতিকেজি মোটা চালের মধ্যে স্বর্ণা জাতের চাল বিক্রি হয়েছে ৫২-৫৩ টাকা। যা এক মাস আগে ৫০ টাকা ছিল। গত মাসে প্রতিকেজি আলু ৩৫ টাকায় বিক্রি হলেও এখন ৪৫ টাকা কেজিদরে বিক্রি হচ্ছে। পাশাপাশি সব ধরনের শিল্পপণ্যের দামও বেড়েছে। বিস্কুটের প্যাকেট আগে যেগুলো ১০ টাকা ছিল, তা এখন ১৫ টাকা। ৬৮ টাকা দামের চানাচুরের প্যাকেট ৮০ টাকা। ৩০ টাকা দামের সাবান ৫৫ টাকা।
সিলেট শহর সহ বিভিন্ন এলাকায় যারা বাসা ভাড়া নিয়ে থাকেন তাদের অবস্থা আরও নাজুক নাম প্রকাশে একজন জানান, আমি একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে কাজ করে মাসে ৩০ হাজার টাকা বেতন পাই। মা-বাবা, স্ত্রী ও এক ছেলে নিয়ে আমার সংসার। সেখান আমিসহ তাদের খাবার জোগাড় করতে মাসে ৫০ কেজির এক বস্তা চাল ৪ হাজার, ৫ লিটার তেল ৮৫০, বাসা ভাড়া ১২ হাজার, সবজি, মাছ, ব্রয়লার মুরগিসহ তরকারি রান্নার উপকরণ কিনতে ৮ হাজার, গ্যাস সিলিন্ডার ২০০০, সাবান-ডিটারজেন্ট ও শ্যাম্পু ৫০০, মুদি বাজার আরও ২ হাজার, বিদ্যু বিল ১০০০ এবং মোবাইল টকটাইমে খরচ হয় ৫০০ টাকা। মা-বাবার হাতে ৫ হাজার টাকা দিলে সব মিলিয়ে খরচ হয় ৩৫ হাজার ৮৫০ টাকা। এছাড়া ছেলের পড়াশোনা, সবার চিকিৎসা, যাতায়াত খরচ তো আছেই।
ফলে নিত্যপণ্যের যে ভাবে দাম বাড়ছে আর যে টাকা আয় করছি, তা দিয়ে এখন আমি সব খরচ বহন করতে পারছি না। প্রতি মাসেই নতুন করে ঋণগ্রস্ত হচ্ছি। তবে আগে মাঝে মাঝে সবাইকে নিয়ে ঘুরতে বের হলেও এখন তা পারছি না। বেঁচে থাকতে প্রয়োজনীয় খাবার রান্না ছাড়া কোনো ধরনের ভালো-মন্দ খাবার জুটছে না। এমন পরিস্থিতিতে জীবনযাপন করতেই খুব কষ্ট হচ্ছে।
এদিকে সিলেট প্রবাসী অধ্যাসিত এলাকা হওয়াতে প্রবাসী পরিবারের সাথে পাল্লা দিয়ে চলতে গিয়ে অনেক ক্ষেত্রে প্রয়োজনের চেয়ে খরচ বেড়ে যায়। তাছাড়া রযেছে প্রতিনিয়ত বিয়েসহ নানা পরিবারিক অনুষ্ঠান। সব মিলিয়ে দিশেহারা হয়ে পড়ছেন নি¤œ ও মাধ্যবিত্ত পরিবারে মানুষেরা। তাদের আয়ের চেয়ে ব্যয়ের পরিমানটি বেশি হচ্ছে বলে অনেকে জানান।

নিউজটি আপনার বন্ধুদের সাথে শেয়ার করুন




© All rights reserved © 2019